Tuesday, December 17, 2024
Homeকালীক্ষেত্র আন্দোলনইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক: মা বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো উদযাপন

ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক: মা বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো উদযাপন

গতকাল ছিল দক্ষিণ দিনাজপুরের বিখ্যাত শতাব্দীপ্রাচীন মাতৃপীঠের মা বোল্লা কালীর পূজার দিন। তিথি নক্ষত্র হিসেবে নয়। রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার পুজো হয়। লিখেছেন- অরুণাভ দত্ত

মা বোল্লা কালীর সাথে জড়িয়ে আছে অনেক ইতিহাস। কারো মতে স্থানীয় জমিদার বল্লভ রায়ের আরাধিতা মা বলেই বল্লভা কালী থেকে বোল্লা কালী নাম। আবার সেনসম্রাট বল্লালসেনের প্রতিষ্ঠিত কোনো প্রাচীন মাতৃপীঠের স্মৃতিতেও বল্লাল কালী থেকে বোল্লা কালী নাম এসে থাকতে পারে।

কথিত আছে, জনৈক ব্যক্তি মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুকুর থেকে মায়ের শিলাময় রূপটি উদ্ধার করেন ও প্রতিষ্ঠা করে নিত্য পুজো শুরু করেন। এই সময়ে মাকে ‘মড়কা কালী’ বলে অভিহিত করা হত। প্রতি জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যায় মায়ের বিশেষ পুজো হতো।

এরপর ইংরেজ আমলে স্থানীয় জমিদার মুরারিমোহন চৌধুরী ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। ঘটনাক্রমে বহু গ্রামবাসী সহ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তখন তিনি মড়কা কালী মায়ের কাছে প্রার্থনা করেন। তিনি বেকসুর খালাস পান।
জ্যৈষ্ঠ মাস আসতে দেরি থাকায় সেই সময় তিনি ঠিক করেন যে, রাস পূর্ণিমার পরবর্তী শুক্রবারে মায়ের পুজো করবেন। সেই থেকে বোল্লা কালী মাতার বাৎসরিক পুজো ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সালটা ১৯২০। মা তখন থেকে রক্ষা কালী নামে পরিচিত হন। তখন ছোট করে পুজো হলেও কালে কালে পুজোর বহর ও কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে সাড়ে সাত হাত মাতৃমূর্তি পুজিত হন।

এখানকার বোল্লা রক্ষা কালী মায়ের কাছে মানত প্রথা একটু আলাদা। বোল্লা রক্ষা কালী মায়ের সামনে কালী মানত করা হয়। মানে মা এর সামনে ছোটো ছোটো মা কালী কে এনে পুজো করা হয়। এই উপলক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গে দ্বিতীয় বৃহত্তম মেলা বসে।

Bolla kali
পুজোর দিন মাকে প্রায় ২০ কেজি ওজনেরও বেশী সোনা ও রুপোর গয়না দিয়ে সাজানো হয়। তাতে যেন মায়ের মূর্তি হয়ে ওঠে আরও মায়াময়ী। দেবীর বাম হস্তের খড়গটিও সম্পূর্ণরূপে সোনার। দেবীকে দেখতে পুজোর দিন মন্দিরের সামনে বহু দর্শনার্থী ভিড় জমায়। তবে দূর থেকে আসা ভক্তদের রাত্রিযাপনের চিন্তার কোন কারণ নেই। মূল মন্দিরের সামনের নাট মন্দিরে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। এর সাথে সারারাত রাস্তায় বিশেষ সরকারি-বেসরকারি বাসের পাশাপাশি অটো-টোটো পাওয়া যায় ।
মূল মূর্তির সাথে, মন্দির লাগোয়া স্থানে ভক্তদের মানত করা শতাধিক কালী মূর্তি পুজো করা হয়। এই পুজোতে গ্রামের মুসলমানরাও উৎসবে মেতে ওঠেন, এইসময় বোল্লা রক্ষা কালী মন্দিরের অদূরেই ঈদগাহে ও তাদের ধর্ম সাধনা ক্ষেত্রে সিন্নি নিবেদন করেন।

বোল্লা রক্ষাকালী মায়ের ভক্তদের জন্য সুখবর। সারাবছর এবার বোল্লা রক্ষাকালী মায়ের মন্দিরে মায়ের মুখ দর্শন সম্ভব হবে। প্রায় সাড়ে তিন কেজি ওজনের রুপোর বোল্লা রক্ষাকালী মায়ের মুখ তৈরি হয়েছে, যা ভক্তদের জন্য সারা বছর মায়ের মন্দিরে মায়ের বেদীতে রাখা থাকবে। এই রুপোর মুখ তৈরিতে ব্যয় হয়েছে প্রায় চার লক্ষ টাকা। আগামী ২২শে নভেম্বর শুক্রবার বোল্লা রক্ষাকালী মায়ের বার্ষিক পুজো। প্রতিবছর মায়ের বার্ষিক পুজোতে তিন দিন পুজোর শেষে মায়ের প্রতিমা মন্দির সংলগ্ন পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হয়, ফলে বছরের বাকি সময় মায়ের ভক্তরা মায়ের মুখ দর্শন করতে পারেন না। পুজো কমিটি এই সমস্যা মেটাতেই মায়ের রুপোর মুখ তৈরি করার উদ্যোগ নেয়। এছাড়াও এই বছর বোল্লা রক্ষা কালী মায়ের প্রতিমায় নতুন অলংকার যোগ হতে চলেছে। পুজো কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে – মায়ের নতুন অলংকারগুলির মধ্যে থাকছে ১০০ গ্রাম ওজনের সোনার জিহ্বা এবং ৮ ফুট দীর্ঘ রুপোর নরমুন্ডমালা। এবছর মায়ের প্রতিমায় সোনা ও রুপো সব মিলিয়ে মোট প্রায় ৩০ কেজি ওজনের অলংকার পড়ানো হবে। মায়ের পুজো কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে – ভক্তদের আবেগের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বোল্লা রক্ষাকালী মায়ের রুপোর মুখের পাশাপাশি নতুন অলংকার মায়ের মহিমাকে আরো প্রসার ঘটাবে বলে মনে করছেন মায়ের ভক্তরা।

bolla kali

প্রতিবছর মায়ের বার্ষিক পুজোতে তিন দিন পুজোর শেষে মায়ের প্রতিমা মন্দির সংলগ্ন পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হয়, ফলে বছরের বাকি সময় মায়ের ভক্তরা মায়ের মুখ দর্শন করতে পারেন না। পুজো কমিটি এই সমস্যা মেটাতেই মায়ের রুপোর মুখ তৈরি করার উদ্যোগ নেয়। এছাড়াও এই বছর বোল্লা রক্ষা কালী মায়ের প্রতিমায় নতুন অলংকার যোগ হতে চলেছে। পুজো কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে – মায়ের নতুন অলংকারগুলির মধ্যে থাকছে ১০০ গ্রাম ওজনের সোনার জিহ্বা এবং ৮ ফুট দীর্ঘ রুপোর নরমুন্ডমালা। এবছর মায়ের প্রতিমায় সোনা ও রুপো সব মিলিয়ে মোট প্রায় ৩০ কেজি ওজনের অলংকার পড়ানো হবে। মায়ের পুজো কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে – ভক্তদের আবেগের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বোল্লা রক্ষাকালী মায়ের রুপোর মুখের পাশাপাশি নতুন অলংকার মায়ের মহিমাকে আরো প্রসার ঘটাবে বলে মনে করছেন মায়ের ভক্তরা।

shoptodina.com
shoptodina.comhttps://shoptodina.com
সপ্তডিঙা। কথাটা শুনলেই মনে আসে বাঙালির সমুদ্রবাণিজ্যের এক গৌরবময় ইতিহাস। গৌড়ের বণিকরা সাতটি বিশাল নৌকার এই সমবায় নিয়ে সিংহল, যবদ্বীপ, সুমাত্রা, চীন, রোম, গ্রীস, ক্রীট, মধ্যপ্রাচ্যের সাথে বাণিজ্য করে ফিরে আসতেন স্বর্ণমুদ্রার ভাণ্ডার নিয়ে। সপ্তডিঙা তাই বাঙালির সংস্কৃতি, ইতিহাস ও অর্থনীতির অভিজ্ঞান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Advertisingspot_img

Popular posts

My favorites